মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০

পিলখানা ট্যাজেডি: কুলাউড়ার লে. কর্নেল সাজ্জাদুর শুধুই স্মৃতি

শরীফ আহমেদ, নিউজ এডিটর। সংবাদমেইল২৪.কম। | শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট  

পিলখানা ট্যাজেডি: কুলাউড়ার লে. কর্নেল সাজ্জাদুর শুধুই স্মৃতি

ফটো: প্রতিবেদকের সাথে শহীদ  লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমানের ছেলে ও ভাতিজা।             ইনসেটে সাজ্জাদুর রহমান

বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) কিছু বিপথগামী সদস্য নিরস্ত্র সেনা সদস্যদের হত্যার আট বছর পেরিয়ে গেলো। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এই নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটে। আট বছর কেটে গেলও এখনো এর কারণ জানতে পারেননি নিহতের স্বজনরা। তারা বলছেন, কেউ আমাদের উত্তর দেয়নি, কেন এই হত্যাকান্ড? একটি মানুষ তো আর এমনি এমনি শহিদ হয় না। এর পেছনে একটা কারণ থাকে।’


জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার সদর দপ্তরের দরবার হলে বিডিআর বিদ্রোহে যে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন তাদের মধ্যে লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমান অন্যতম। বিদ্রোহের প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করা হয় পিলখানার সদর দপ্তরের ভেতরে একটি গণকবর থেকে। লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমান (দোয়েল) কুলাউড়া উপজেলার পৌরশহরের বিহালা গ্রামের ডা. শফিকুর রহমান ও লুৎফুন্নাহারের ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমান দোয়েল বিডিআর সদর দপ্তরে কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে থাকতেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার দরবার হলে বিদ্রোহকালে তিনি প্রথমে নিখোঁজ হন। তার স্ত্রী শারমিন নিশাত উর্মি জানান, ঘটনার দিন বুধবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে দোয়েল মুঠোফোনে তাকে বলেন, ‘আমি ভালো আছি চিন্তা করো না’। এ কথা বলে তিনি লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।


শারমিন জানান, এর কিছু সময় পর বিডিআর জওয়ানরা তাদের আটক করে ফেলে। পরদিন বৃহস্পতিবার ২৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে তখন বলেছিলেন, ‘ছেলেরা এখানো তাদের আব্বুর কথা বলে শুধুই কাঁদে। তাদের দুই ছেলে ইশফাক রাইফেলস্ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে থেকে মাধ্যমিক পাস করে উচ্চ মাধ্যমিক ও ছোট ছেলে ইত্তেসাফ মাধ্যমিকে পড়াশুনা করছে।

ওই নারকীয় হত্যাকান্ডের বিচারে অসন্তোষ প্রকাশ করেন নিহত দোয়েলের মা লুৎফুন্নাহার (৬৭)। তিনি হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। পিলখানা হত্যাকান্ডর ঘটনাটি পরিকল্পিত। ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও ইন্ধনদাতারা আজো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে হলে তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দিতে হবে।”
এদিকে কুলাউড়ায় শহিদ লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমানের স্মরণে পৌরশহরের বিহালা গ্রামে তার বাড়ির সামনের সড়কটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই পথে চলতে গিয়ে স্থানীয় লোকজন এখনো শহিদ সাজ্জাদের অতীত স্মৃতি রোমন্থন করেন গভীর শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়।


কর্নেল সাজ্জাদুর রহমানের দুই ছেলের কাছে জানতে চাইলাম বাবার কথা মনে আছে কিনা। তখন কিছুটা মনভারী করে ইত্তেসাফ বলেন, “বাবা যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তখন আমি ছোট ছিলাম। আমার কিছু করার ছিল না। এখন আমি এখন পড়াশোনা করছি, দেখি বড় হয়ে বাবা হত্যার বিচারের সঠিক দাবি পালন করতে পারি কি না।” উল্লেখ্য,লে.কর্নেল সাজ্জাদ ১৯৮৬ সালে ক্যাডেট হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি কুলাউড়া পৌরসভার বিহালা গ্রােেমর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক সাব লে. প্রয়াত ডা. শফিকুর রহমানের ছেলে। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।

সংবাদমেইল২৪.কম/এসএ/এনএস

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ১০:০৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত