স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | সোমবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করে ভোট পূণ:গণনার দাবী জানালেন তিন মেয়র প্রার্থী।
(১৮ জানুয়ারী) সোমবার বর্তমান মেয়র নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব শফি আলম ইউনুছ পৌর মিলনায়তন,ধানের শীষের প্রার্থী কামাল আহমদ জুনেদের পক্ষে বিএনপি কার্যালয়ে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতিকের মোঃ শাজান মিয়া তাঁর নিজ বাসভবনে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ দাবী জানান।
বর্তমান মেয়র শফি আলম ইউনুছ বলেন, কুলাউড়ার ইতিহাসে তাঁর জীবদ্বশায় স্থানীয় নির্বাচনে দিন দুপুরে এমন ভোট জালিয়াতি ও ব্যালট ছিনতাই করে জোঁরপূর্বক ভোট প্রদান করে কেউ বিজয়ী হতে দেখেননি। সাধারণ জনগন এই পৌর নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন।
কুলাউড়া পৌরসভা হলরুমে সোমবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুনঃ নির্বাচনের দাবী জানিয়ে শফি আলম ইউনুছ অভিযোগ করে বলেন, ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি সুষ্ঠ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের আশ্বাস দেয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্ত ১৬ জানুয়ারীর নির্বাচনে জাল ভোট ও কারচুপির মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার পরিকল্পনা জানা থাকলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতেন না। তিনি বলেন নির্বাচনের দিন পৌরসভার ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের ভোটাররা সোচ্চার থাকায় উক্ত ২ ওয়ার্ডে সঠিক ভোট অনুষ্টিত হয়েছে। উক্ত ২ ওয়ার্ড ছাড়া অপর সকল কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে সীমাহীন জাল ভোট প্রদান করে ও হট্টগোল সৃষ্টি করে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রশাসনের মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে।
এছাড়া ভোট চলাকালে ৫নং ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকার জালভোট দেয়ায় পুলিশ ১জনকে আটক করে পরে ছেড়ে দেয়। তিনি আরো বলেন এ অনিয়মের ভোট অনুষ্টিত হওয়ায় বর্তমানে কুলাউড়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অপরদিকে জনমনে সরকারের ভাবমুর্তি বিনষ্ট করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ফলাফল ঘোষণার পূর্বে ২নং ওয়ার্ডের ভোট ৫নং কেন্দ্রের ভোট সংযুক্ত করে ভোটের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মানুষের পবিত্র আমানত মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার স্বার্থে পুনঃ নির্বাচনের জোর দাবী জানান।
ধানের শীষের প্রার্থী কামাল আহমদ জুনেদের পক্ষে উপজেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ ও ছাত্রলীগ বাহিনী পেশি শক্তি দিয়ে বিএনপির নিশ্চিত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা এ ফলাফল প্রত্যাখান করে পাশপাশি পূণরায় রি-নির্বাচনের দাবী জানাচ্ছি।
জগ প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ শাজান মিয়া তাঁর নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবী করেন তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগ বাহিনী। তিনি বলেন, প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে নির্বাচনের দিন ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে কেন্দ্রে জোর পূর্বক ঢুকে জাল ভোট প্রদান করেছে। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সেন্টারে ভাড়াটিয়া ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ২ নং, ৫ নং কেন্দ্রে প্রকাশ্যে জাল ভোট প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ফলাফল ঘোষণার পূর্বে তার বিজয় নিশ্চিত জেনে ২নং ও ৫নং কেন্দ্রের ফলাফল আটকে রেখে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক রুমেল তার ভাই সাবেক সম্পাদক রুবেল,স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেল ও ছাত্রলীগ নেতা মিজান বাহিনী ভোটের দিন প্রকাশ্যে প্রভাব বিস্তার করে ব্যালট ছিনিয়ে ৭ টি কেন্দ্রে জোর পূর্বক নৌকায় শীল দেয়। রুমেলকে পুলিশ হাতেনাতে ধরে হাতকড়া লাগালেও কোন অদৃশ্য কারনে প্রায় ১৫ মিনিট পর তাকে পুলিশ আবার ছেড়ে দেয়। এরপর সে তার বাহিনী নিয়ে অন্যান্য কেন্দ্রে গিয়ে প্রকাশ্যে নৌকায় জাল ভোট দেয়। এভাবে যদি জাল ভোট হয় তাহলে আমরা প্রবাস থেকে এসে কখনো প্রার্থী হতাম না। আমার নিশ্চিত বিজয়কে হারিয়ে উল্টো ১৫৩ ভোটে নৌকাকে জয়ী দেখানো হয়েছে। যা কুলাউড়া পৌরবাসী মেনে নিতে পারছেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ঢাকা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভোট পূণ:গণনার জোর দাবী জানান। অন্যথায় তিনি উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
Posted ৭:৪৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.