স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
বনবিটের বন কর্মকর্তার যোগসাজসে সরকারি বনাঞ্চল থেকে অবাধে গাছ কেটে চলছে অবৈধ ক্রয়-বিক্রয়। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই বনবিটে গাছ কাটার এই নিধনযজ্ঞ চলছে। স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক বছর যাবৎ এসব গাছ কাটার ঘটনা ঘটলেও এবার নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে অবাধে কেটে বন সাফ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরমচাল বনবিটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আহমদ আলীর সহযোগিতায় টিলা থেকে কয়েক সপ্তাহ থেকে চলছে অবাধে গাছ কাটার মহাযজ্ঞ। এই গাছ গুলো ক্রয় করছেন উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আহাদ ও বরমচাল ইউনিয়নের সিঙ্গুর গ্রামের আব্দুল হাসিম।
বিষয়টি স্থানীয় লোকজন বন কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও তারা এবিষয়ে কোন কর্ণপাত করেননি। এছাড়াও বিষয়টি আমলে না নিয়ে বরঞ্চ গাছ কাটার বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে অস্বীকার করে আসছিলেন বরমচাল বিটের কর্মকর্তা আহমদ আলী। এদিকে স্থানীয়রা আরো জানায়, গত কয়েক বছর থেকে এই বনবিট থেকে নানা প্রজাতির গাছ কাটা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বরমচাল বনবিটের পশ্চিম সিঙ্গুর এলাকায় প্রায় ১৫-২০ একর জায়গা জুড়ে কয়েকটি টিলায় অবাধে কাটা হচ্ছে ৮-১০ বছর বয়সী আকাশী, বেলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির দামি গাছ। একটি টিলার সবক’টি গাছ কেটে তা গাড়ি দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলেও গাছের গোড়ার অংশ ও ডালপালার চিহ্ন এখনো পড়ে আছে। আরেকটি টিলায় গাছ কাটা হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে কর্তনকর্মীরা টিলা থেকে কৌশলে অন্যত্র সটকে পড়ে। এসময় দেখা যায় ওই টিলায় প্রায় শতাধিক গাছ কেটে তা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এবং আরো শতাধিক গাছ কাটা অবস্থায় টিলায় পড়ে আছে। ভিডিও ও ছবি তোলার সময় দেখা হয় সফর আলী নামে এক প্রহরীর সাথে।
তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক সময় থেকে তিনি বনের গাছগুলো পাহারা দিচ্ছেন। কেন পাহারা দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা গাছ ক্রয় করে নিচ্ছেন তারা তাকে দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি দিয়ে রেখেছেন। এসময় গাড়ি দিয়ে গাছ অন্যত্র নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন,সোমবার একটি ট্রাক বন কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নেয়া হয়েছে। তবে বরমচাল বনবিট অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি ট্রাক বোঝাই সেই গাছগুলো এবং বনবিট কর্মকর্তাকে।
বরমচাল বিটের বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) আহমদ আলী তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি সরেজমিনে গিয়ে তাদের বাধা দেই। এবং কিছু গাছ জব্দ করি।
বন বিভাগের কুলাউড়ার রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমি সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সিলেট বনবিভাগ কার্যালয়ের উপ বন সংরক্ষক এস এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
Posted ৪:০৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.