মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০

কুলাউড়ায় শেকলে বাঁধা তৌফিক মিয়ার করুণ আকুতি…

বিশেষ প্রতিনধি,সংবাদমেইল২৪.কম | রবিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট  

কুলাউড়ায় শেকলে বাঁধা তৌফিক মিয়ার করুণ আকুতি…

কুলাউড়া উপজেলার জয়জন্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর গ্রামের একটি জীর্ণ কুটিরে ৪ বছর থেকে শিকলবন্দী তৌফিক মিয়া (৩২)। অচেনা কাউকে দেখলেই ফেল ফেল করে চেয়ে থাকেন। তার চাহনি যেন সুস্থ হয়ে উঠার একটা করুণ আকুতি। পরিবারের লোকজনের দাবি তৌফিক মিয়া পাগল। কিন্তু চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য তাদের নেই। অন্যের ক্ষতি যাতে না করে এজন্যই শেকলবন্দি করে রাখা হয়েছে।

জানা যায়, ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত ক্বারী রমিজ উদ্দিন ওরফে ‘রমিজ ক্বারী’ জীবিত দু’ছেলের মধ্যে তৌফিক মিয়া ছোট। বড় ভাই মোশাহিদ আলী ওরফে আয়না মিয়া জানান, ৪ বছর আগে তাদের পিতা মারা যাবার পর ছোট ভাই তৌফিক মিয়া পুরোপুরি পাগল হয়ে যায়। নিজের সামর্থ্য ও পাশর্^বর্তীদের সাহায্যে ছোট ভাইকে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করে ভাইকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি। আশপাশ মানুষের ক্ষতি করতে পারে এই আশঙ্কায় তাকে শিকলবন্দি করে ঘরে রেখেছেন।


জীবদ্ধশায় বিভিন্ন মসজিদ-মক্তবে চাকরি করে কোন রকমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চলছিলো রমিজ ক্বারীর পরিবার। ৪ বছর আগে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে যান। পিতার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেন বড় ছেলে মোশাহিদ আলী (আয়না মিয়া)। দিনমজুরের কাজ করে মা, পাগল ভাই, বোন ও নিজের স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে চালাচ্ছিলেন সংসার।

সরেজমিন আয়না মিয়ার বাড়িতে গেলে পরিবারের এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়ে। আধপাকা একটি ঘরের মধ্যে শুয়ে আছেন মা, বোন ও পাগল ভাই। ভাইয়ের পায়ে শিকল বাঁধা। ঠিকমত নাওয়া-খাওয়া না করায় শরীরে রোগব্যাধী জেঁকে বসেছে।


আয়না মিয়া আরও জানান, গত ৫ বছর থেকে নিজের স্ত্রী অসুস্থ। ডাক্তার দেখানোর পর বিভিন্ন পরীক্ষাতে জরায়ূতে সমস্যা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অপারেশন করতে হবে। টাকার অভাবে আজও স্ত্রীর অপারেশন করাতে পারেননি। গত ৬ মাস আগে পুকুরপাড়ে পড়ে ছোট বোন রুলি বেগমের পায়ের গোড়ালি ভেঙ্গে যায়। কোন উপায়ান্তর না দেখে ১২ শতকের পৈতৃক ভিটা থেকে কিছুটা বিক্রি করে বোনের চিকিৎসা শুরু করি। ৬ মাসে পর পর ৩টি অপারেশন করেন ডাক্তার। কিন্তু আজও আমার বোনটি সুস্থ হয়ে উঠেনি। তার পায়ের গোড়ালির ভাঙ্গা স্থানটি জোড়া লাগেনি। সর্বশেষ গত ১ মাস আগে হটাৎ করে বৃদ্ধ মা স্টোক করেন। মাকে নিয়ে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করি। বর্তমানে গোটা পরিবারের সবাই অসুস্থ। এভাবে বলতে বলতে একপর্যায়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন আয়না মিয়া।

শেকলে বাঁধা তৌফিক মিয়ার ফেল ফেল চাহনি যেন সুস্থ হয়ে উঠার একটা করুণ আকুতি। দু’মুটো অন্ন নাকি চিকিৎসার সংস্থান করবেন আয়না মিয়া। হাতাশা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাকে। সমাজের বিত্তবানরা একটু সুনজর দিলে আস্থাকুড়ে থেকে উঠতে পারে পরিবারটি। মহৎপ্রাণ কোন সুহৃদ আয়না মিয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইলে (০১৭২৮-৯৯৬৪০১) এই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।#


Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৬:৫২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত