বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট
চৈত্রের দাবদাহ গরম মাসে মূষলধারে অভিরাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা বাগানগুলো জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে আগাম বৃষ্টি।
কুলাউড়ার বিভিন্ন চা-বাগানে এবারের প্রথম বৃষ্টিতে চা গাছে গজাচ্ছে নতুন কুঁড়ি পাতা। এ কারণে উপজেলার ২৬ টি চা বাগানে এবার চায়ের ফলন দ্বিগুন মাত্রায় বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। ইতি মধ্যে বিভিন্ন চা-বাগানে কচি চায়ের কুঁড়ি উত্তোলন শুরু করেছেন চা শ্রমিকরা। নারী চা শ্রমিকরা চা পাতা উত্তোলনের জন্য সকাল থেকেই দল বেঁধে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি তোলার জন্য চা বাগানের বিভিন্ন টিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েন।
বাগান-সংশ্লিষ্টদের আশা, সামনের দিনগুলো আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল চায়ের চাহিদা এবং দাম সারা দেশে ও বিদেশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে বাগান কর্তৃপক্ষ নতুন বাগান সৃজনের পাশাপাশি কারখানার পরিধিও বৃদ্ধি করেছে।
দিলদারপুর-ক্লিভডন চা বাগানের ম্যানেজার আব্দুল হাছিব জানান, এই সময়ে অনান্য বছর চায়ের গাছে পানি সরবরাহের জন্য গভীর নলকূপ নতুবা পানির উৎস তৈরি করে পানির পাম্পের মাধ্যমে পাইপ দিয়ে চায়ের গাছে গুড়ায় পানি দিতে বাগান কর্তৃপক্ষকে নানা হিমশিম পোহাতে হতো। এতে ব্যয় ছিলো প্রচুর। কিন্তু এবার আগাম বৃষ্টির কারনে আমাদের পানি সরবরাহের বেগ পেতে হয়নি। বৃষ্টির ফলে চা বাগানে নতুন কুঁড়ির অভাবনীয় সাফল্য দেখা দিয়েছে। ফলে এখন কুলাউড়ার পাশাপাশি সারা দেশে চায়ের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে চায়ের গুণগত মানসহ চা চাষের পরিধি বৃদ্ধির জন্য পতিত এলাকায় নতুন চারা গাছ রোপণের কাজ চলছে। এই বৃষ্টি বাগানের জন্য অনেক উপকারী,বিশেষ করে নতুন চা গাছের জন্য।
সূত্রে জানা যায়, গত বছর বৃষ্টিপাত দেরিতে হওয়ায় আবহাওয়াজনিত কারণে সিলেটে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ১০ ভাগ কম হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বেশি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন চা শ্রমিকরা। চৈত্র মাসের মেঘের আগমন ঘটায় এবার ভাগ্য প্রসন্ন বলেই মনে করছেন তারা। যার ফলে বাগান চা শ্রমিকরা অনেক বেশি খুশি।
মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য শুভ লক্ষণ। মনে করেন চা-বাগান মালিকরা। এই বৃষ্টির পরশে চা-গাছে গজাবে নতুন কুঁড়ি। তবে এই বৃষ্টিতে জনজীবনে কিছুটা ছন্দ পতন হয়েছে কিন্তু চা-উৎপাদন বৃদ্ধিতে বেশ উপকারী’ বলে অভিহিত করেছেন চা-বাগান সংশ্লিষ্টরা। হঠাৎ বৃষ্টির ফলে কয়েকদিনের মধে কচি কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করবে চা-গাছগুলো। আগে কুঁড়ি ছাড়লে আগে চা পাতা উত্তোলন শুরু হবে।
বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ জাকারিয়া বলেন, অগ্রিম বৃষ্টি চা-বাগান গুলোর জন্য নেয়ামক। এবার চায়ের উৎপাদন দ্বিগুন মাত্রায় বাড়ার আসা করছি।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারআবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. হারুনুর রশিদ জানিয়েছেন, বৃষ্টির পরশে চা-গাছ আগে-ভাগে কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করছে। গত কদিন থেকে থেমে থেমে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টি চা বাগানের জন্য খুবই উপকারী।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই) এর পরিচালক ড. মাঈন উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই বৃষ্টি চায়ের জন্য উপকারী। এর ফলে চা গাছের গ্রোধ বৃদ্ধি পাাবে এবং চা গাছে দ্রুত ফ্লাশ দেখা দেবে। মাঝে মাঝে এমন বৃষ্টি হলে সেচ কম লাগবে এবং চায়ের উৎপাদন কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সহজ হবে।
Posted ৬:১৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.