জসিম চৌধুরী,সংবাদমেইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের কোনাগাও গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবু ইউসুফের ছেলে এক সময়ের মেধাবী ছাত্র দুদুর্ষ জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন এখন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে কনডেম সেলে ফাঁসির প্রহর গুনছে।
আর মাএ একটি মুহুর্ত রাষ্ট্রপতির তার প্রাণভিক্ষা অসম্মতি জানালে যেকোন সময় এই দুদুর্ষ জঙ্গিকে ফাঁসি রসিতে ঝুলতে হবে।
বাংলাদেশ নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর ২০০৪সালের ২১মে সিলেটের হযরত শাহাজালাল (রহ.) মাজার শরীফে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামির অন্যতম জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন।
মামলার অপর দুই আসামি জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুল বন্দি আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রিয় কারাগারে। শুধু রিপন বন্ধি রয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে। ফলে সেখানেই তার ফাঁসির রায় কার্যকর হতে যাচ্ছে।
এদিকে গত ২২ মার্চ বুধবার সকালে রিপনকে রিভিউ খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া মৃত্যুদন্ডের চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয়। রায় পড়া শেষে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে রিপন জানান, তিনি আইনজীবী ও পরিবারের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
অপরদিকে গত ২৭ মার্চ সোমবার প্রাণভিক্ষা চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেন বলে জানান সিলেট কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া। রাষ্ট্রপতির কাছে তার প্রাণভিক্ষার আবেদন পৌঁছানোর পর তিনি প্রাণভিক্ষা দিতে আনুষ্ঠানিক অসম্মতি জানালে এই জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না। যেকোন সময় তার ফাঁসি কার্যকর করতে পাবে কারা কর্তৃপক্ষ।
সূত্রে জানা গেছে, ইতমধ্যে রিপনের পরিবারের সকল সদস্যরা তার সাথে শেষ দেখা করে এসেছেন।
উল্লেখ্য,২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী,সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান,বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদন্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারী শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দন্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারী রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।
আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা রিভিউ করেন। (১৯ মার্চ) রবিবার দেওয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়।
যেভাবে জঙ্গি হলো রিপন: একসময়ের মেধাবী ছাত্র দেলোয়ার হোসেন রিপন ১৯৯৬ সালে ব্রাহ্মনবাজার জালালাবাদ হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস এসি পাশকরে সিলেট মদন মোহন বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়,সেখানেও সে কৃতিত্বের সাথে তার শিক্ষা জীবন চালিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু তৎকালীন জেএমবি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও মুফতি হান্নানের প্ররোচনায় পড়ে রিপন দুদুর্ষ জঙ্গি হয়ে উঠে বলে জানা গেছে, এছাড়াও এলাকার লোকমুখে গুনঞ্জন ছিলো তৎকালীন সময়ে শায়েখ আব্দুর রহমান সিলেটে গ্রেফতার হওয়ার আগে প্রায় সময় রিপনের বাড়িতে যাওয়া আসা ছিলো।
সংবাদমেইল২৪.কম/এন আই
Posted ৪:৩৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.