সিলেট জেলা প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মন্নানের ১২ সদস্যের পরিবার সিরিয়ায় আইএসে যোগদানের খবর পুরনো। সম্প্রতি আব্দুল মন্নানের ছেলে নবীনের অস্ত্র হাতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে ফের আলোচনায় এসেছে ওই পরিবারটি।
সোমবার বিকেলে সরজমিনে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজাগাঁও গ্রামে অবস্থানকারী ওই পরিবারের সদস্য আব্দুল লতিফ লুলু মিয়া অস্ত্রহাতে যুবকটির ছবি দেখে নিশ্চিত করেন, তিনি সিরিয়ায় পাড়ি জমানো ১২ সদস্যের পরিবারের সদস্য নবীন।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে লন্ডন থেকে সিলেটে পরিবারের ১১ সদস্যকে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন আব্দুল মন্নান। সিলেট থেকে লন্ডন যাওয়ার পথে তুরস্ক থেকে নিখোঁজ হন তারা। নিখোঁজ ব্রিটিশ নাগরিক আব্দুল মন্নানসহ ওই পরিবারে ছিলেন তার স্ত্রী মিনারা বেগম, ছেলে সালেক হোসেন, মেয়ে মারিয়া বেগম, রাজিয়া বেগম, তৌফিক হোসেন, আকিফ হোসেন, মারিয়া বেগমের স্বামী আবুল কাশেম, তাদের মেয়ে ফাতিমা বেগম, সালেকের স্ত্রী রওশন আরা বেগম ও তাদের এক কন্যা সন্তান।
তারা সবাই সিরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। সিরিয়ায় যাওয়ার খবর জানতে পেরে ব্রিটিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছিল বলে জানান আব্দুল লতিফ লুলু মিয়া। পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
তিনি জানান, সম্প্রতি নবীনের অস্ত্র হাতে একটি ছবি তার বন্ধুর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর হাতে যায় এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর মাইজগাঁওয়ে এসে আবারো তথ্য ও পরিবারের ছবি সংগ্রহ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী।
এছাড়াও পুলিশ তাদের পরিবারের সব সদস্যের ছবিও সংগ্রহ করেছে।
নবীনের চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন জানান, পরিবারের সদস্যরা আইএসে যোগদানের নেপথ্যে মেয়ে রাজিয়া বেগমের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আব্দুল মন্নান ষাটের দশকে লন্ডনে পাড়ি জমিয়ে পরিবারের সঙ্গে লুটন শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।
সাব্বির হোসেন আরও জানান, সিরিয়ায় পাড়ি জমানো ওই ১২ সদস্যের মধ্যে তাদের ভাই আবুল কাশেমও রয়েছেন। তিনি আব্দুল মন্নানের মেয়ে মারিয়া বেগমের স্বামী। বর্তমানে লন্ডনে আব্দুল মন্নানের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে অবস্থান করছেন। তবে তারা আব্দুল মন্নানের প্রথম স্ত্রীর ছেলে-মেয়ে। তারা লন্ডনে আলাদা থাকেন। সিরিয়ায় যাওয়ার পর সিলেটের পরিবারের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি বলেও জানান তিনি। কোনও তথ্য পেলে সরাসরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালেক জানান, পুলিশ আব্দুল মন্নানের বাড়িতে গিয়ে সবধরনের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করেছে। এমনকি অস্ত্র হাতে যে যুবকটি রয়েছে সেই যুবকটি হলেন নবীন। পুলিশ এ ছবিটিও সংগ্রহ করে রেখেছে। প্রায় দুইবছর আগে নবীনরা তার বোন রাজিয়া বেগমের মাধ্যমে সিরিয়ায় গেছেন বলে বাড়িতে থাকা নবীনের চাচা লতিফ মিয়া পুলিশকে জানিয়েছেন।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানান, পুলিশ নবীনদের বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজদের সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে এবং যারা ওই বাড়িতে রয়েছেন তাদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সংবাদমেইল২৪.কম/এইচ জেড/এন আই
Posted ৪:০৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.