মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০

অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে চরম দুর্ভোগের শিকার কুলাউড়ার ৫ ইউনিয়নের মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট  

অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে চরম দুর্ভোগের শিকার কুলাউড়ার ৫ ইউনিয়নের মানুষ

কুলাউড়া উপজেলার সদর হতে রবিরবাজার হয়ে ঢিলেরপার বাজার পর্যন্ত এবং রবিরবাজার হতে টিলাগাঁও পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দক্ষিণের ৫ ইউনিয়নের বাসিন্দারা। গত ৮মাস থেকে অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায় মানুষের এই দুর্ভোগ।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা সদর হতে রবিরবাজার হয়ে ঢিলেরপার বাজার পর্যন্ত এবং রবিরবাজার হতে টিলাগাঁও পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। রাস্তা প্রশস্থকরণসহ পাকাকরণ ১৮ মাসে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার ওয়াহিদ কন্সট্রাকশর নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ পাওয়ার পর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কোন পরিকল্পনা ছাড়াই যেন কাজ বাস্তবায়ন শুরু করে। রাস্তাটি প্রশস্থ করতে দু’পাশ ৩ফুট করে গর্ত করে ভরা বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করে। ফলে পাকারাস্তা ভেঙে শুরু হয় দুর্ভোগের। রাস্তার তখন বেহাল অবস্থা। তা দেখে পাকাটুকু তুলে নতুন করে পুরো রাস্তার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুর্ভোগ তখন চরম আকার ধারণ করে। মালবাহী কাঁচা রাস্তা আটকে গোটা রাস্তার যান চলাচল ব্যাহত করে দিতো। এমন দুর্ভোগে কাটে বর্ষাকাল। শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে রাস্তা থেকে ধুলো ঝড় নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। কুলাউড়া থেকে রবিরবাজার যেতে যাত্রীদের ধুলোমাখা চেহারা নিয়ে পড়তে হতো বেকায়দায়।


এদিকে উন্নয়ন বিড়ম্বনার দুর্ভোগ লাগে পরিবহন সেক্টরেও। কুলাউড়া থেকে রবিরবাজার মাত্র ১০ কিলোমিটার সড়কের সিএনজি অটোরিক্সার ভাড়া ছিলো ২০ টাকা। রাস্তা খারাপ অযুহাতে তারাও ৫ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা শুরু করে দেয়। ফলে মানুষ যে শুধু চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে তা কিন্তু নয়, সাথে সাথে অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

উপজেলার রাউৎগাঁও, পৃথিমপাশা, কর্মধা, টিলাগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা এই সড়ক ব্যবহার করেন। শুধু সাধারণ যাত্রী নয় স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন দুর্ভোগ মাড়িয়ে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা জানান, তারা বিভিন্ন কর্মস্থলে পৌছতে তাদের প্রতিদিন আধাঘন্টা ৪০ মিনিট বিলম্ব হয়।


কুলাউড়া রবিরবাজার সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারী আলী আমজদ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাদির জানান, ১০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে লাগে দেড় ঘন্টা। একবার গেলে আর ফিরে আসতে মন চায় না। রবিরবাজার থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিদিন কুলাউড়া আসা আশফাক তানভীর জানান, এই রাস্তায় মোটরসাইকেল চালিয়ে এক সপ্তাহ আসা যাওয়ার ফলে ১৫ দিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় থাকতে হয়েছে। ধুলোবালিতে সর্দি কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হতে বাধ্য। বিকল্প রাস্তায় এখন কুলাউড়া যেতে এবং ফিরতে অতিরিক্ত বিশ বিশ ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। কর্মধার বাসিন্দা মারুফ আহমদ জানান, কুলাউড়ায় যেতে হলে মোটরসাইকেল রবিরবাজার রেখে যাই। গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলেও রাস্তার দুর্ভোগের কারণে যেতে মন চায় না।

এব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের সাইড ইঞ্জিনিয়ার জহির (যিনি পুরো নাম বলতে রাজি নন) এর সাথে যোগাযোগ করলে কাজ সম্পর্কে কোন কথা না বলে তার সাথে দেখা করতে বলেন। তবে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ মেষ করা হবে বলে জানান।


Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৫:০৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৯

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত