বহুকাল ধরে নিররতা, নিপীড়ন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বঞ্চনার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে আসছে বাংলাদেশের চা-শ্রমিকেরা। দেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ নেই। তারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে, খালি পায়ে, জোঁক, মশা, সাপসহ বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড় খেয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কাজ করতে হয়। তাতেও তাদের কষ্ট নেই। সারাদিন অতিকান্ত হয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে তাদের মুখের হাসিটি যেন থেমে থাকে না।
হাসিটি যেন তাদের কষ্ট দূর করে দেয়। ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া যাবার পথে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সেই সব চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেল তাদের জীবন যাপন সর্ম্পকে।
বাগানে চা-গাছ বছরের পর বছর যতœ করে কুঁড়ি থেকে বড় করে তোলেন চা শ্রমিকরা। পাতা ছেঁড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে পরিশোধিত চা দেশ-বিদেশে পাঠানোর সিংহভাগ কৃতিত্ব তাঁদের। অথচ সেই শোধনকৃত চা পানের কোনো আর্থিক সংগতি নেই চা শ্রমিকদের। তাঁরা বাগান থেকে ছিঁড়ে কাঁচা চা পাতা লবণ-পানিতে গুলে তা পান করছেন। এত অগ্নিমূল্যের চাপাতা কিনে খাওয়ার সাধ্য তাঁদের নেই। পরিশোধিত চা খেতে নয়, তা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া তাদের আনন্দ মনে করেন।
দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় চা-শ্রমিকেরা সব দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে নিররতা।চা-বাগানগুলোতে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা খুবই নাজুক।
তুহিন আহমদ পায়েল
সাংবাদিক
ই-মেইল: payel61@gmail.com
০১৭১১২৩৮০৭৮